Tech News

Thursday, August 13, 2020

আজ (বাংলা) বৃহঃস্পতিবার ২৯শে শ্রাবণ ১৪২৭ বঙ্গাব্দ


প্রদীপ-লিয়াকতকে বাঁচাতে চায় কারা?

মহেশখালী আদালতে ২৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

মেজর (অব.) সিনহা হত্যাকান্ড নিয়ে সারাদেশে যখন তোলপাড়; হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে সব মহল সোচ্চার। তখন প্রতীপ ও লিয়াকতকে বাঁচানোর চেষ্টা চলছে। তখন টেকনাফ থানা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নানা মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষীকে র‌্যাব আটকের পর তাদের বাড়িতে গিয়ে অপহরণ মামলা করতে বাধ্য করে টেকনাফ থানা। এতে পুলিশ কি অভিযুক্ত ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতকে রক্ষার জন্য মামলা তদন্তকারী সংস্থার মুখোমুখি হতে চায়? নাকি বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ ও আইসি লিয়াকতের অপকর্ম আড়াল করে বাঁচাতেই সক্রিয়? এমন প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে স্থানীয়দের মাঝে। যদিও অপহরণ মামলা করতে বাধ্য করার ঘটনা অস্বীকার করে টেকনাফ থানার কর্মকর্তারা জানান এমন কোন ঘটনা ঘটেনি।

মেজর সিনহা হত্যা মামলায় ৪ পুলিশসহ ৭ আসামির ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত মঙ্গলবার তাদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছিল র‌্যাব। এর আগে পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষীকে ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে গ্রেফতার করে তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাব। পরে তাদের কক্সবাজার জেলা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এই তিনজন ঘটনার সাথে জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে বলেও জানিয়েছে র‌্যাব। মঙ্গলবার আদালতে তাদের ১০ দিন করে রিমান্ড চাইলেও শুনানি শেষে আদালত তাদের ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গ্রেফতারের আগে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের কাছে তাদের দুই সাক্ষী বলেছেন, মেজর সিনহা হত্যার বিষয়ে তারা কেউ নিজের চোখে কিছু দেখেননি। ৩১ জুলাই ঘটনার পর স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে তাদের টেকনাফ থানায় নিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়া হয়।

টেকনাফ থানায় পুলিশের করা মামলার প্রধান তিন সাক্ষীর একজন নুরুল আমিন। মেজর অব. সিনহা হত্যার ঘটনায় ঘটনার পর তিনি বলেছিলেন, নিজের চোখে কিছুই দেখেননি, শোনেনওনি। একই কথা বলেছেন সেই মামলার আরেক সাক্ষী মোহাম্মদ আয়াছও। গত সোমবার বিকেলে সেই সাক্ষীদের বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে হেফাজতে নিয়ে আসে তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাব। পরদিন মঙ্গলবার সিনহা হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।

র‌্যাব আসামিদের নিয়ে যাওয়ার পর মধ্যরাতে ঘটে টেকনাফ থানা পুলিশ মারিশ বনিয়ায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বারকে সঙ্গে নিয়ে নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দীন ও মোহাম্মদ আয়াছের বাড়িতে যায়। তদন্ত যখন র‌্যাবের হাতে, তখন আসামিদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে পুলিশের উপস্থিতির কারণ কী? এমন প্রশ্ন এখন সর্বত্র।

টেকনাফ থানায় নিয়োগ পাওয়া নতুন ওসি আবুল ফয়সল কি যোগ দিয়েছেন প্রদীপ-লিয়াকত সিন্ডিকেটের সাথে? নিজাম উদ্দীন নাজুর স্ত্রী শাহেদা বেগমকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাত আড়াইটার দিকে লাথি মেরে দরজা ভেঙে পুলিশ বলে, আপনার স্বামীকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এটা বলতে হবে।

মোহাম্মদ আয়াছের ভাই মো. মোবারক জানান, রাত তিনটার দিকে পুলিশ আসে বাসায়। এসে একটা দস্তখত নিয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, ভোর রাতে নুরুল আমিনের মা খালেদা বেগমকে টেকনাফ থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। খালেদা জানান, সেখানে দুটি কাগজে টিপ সই নিয়ে আবার বাড়িতে পৌঁছে দেয় পুলিশ। হাতের টিপসইয়ের ছাপ দেখিয়ে নুরুল আমিনের মা খালেদা বেগম বলেন, পুলিশ বলছে তোর ছেলের মরা মুখ না দেখতে চাইলে এখানে টিপসই দে। খালেদা বেগমের টিপসই দেয়া সেই মামলার কাগজ পৌঁছেছে বিভিন্ন সংবাদকর্মীদের হাতে।

র‌্যাব সদস্যদের অজ্ঞাতনামা সাদা পোশাকের লোক হিসেবে উল্লেখ করে, মধ্যরাতেই অপহরণ মামলা নেয় অতি উৎসাহী টেকনাফ থানা পুলিশ। মামলার এজাহারে স্বাক্ষরও করেন টেকনাফে নতুন যোগ দেয়া আসা ওসি আবুল ফয়সল। অথচ র‌্যাব ওই তিনজনকে গ্রেফতার করার পরে যথানিয়মে আদালতে হাজির করেন এবং তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করেন। র‌্যাবের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত গতকাল বুধবার ওই তিনজনের সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তবে বিষয়টি সঠিক নয় দাবি করে টেকনাফ থানা কর্তৃপক্ষ জানায়, থানায় এ ধরণের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

এদিকে মহেশখালীর বহুল আলোচিত আবদুস সাত্তার কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহতের ঘটনায় থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। গতকাল মহেশখালীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন আবদুস সাত্তারের স্ত্রী হামিদা আক্তার। হত্যা মামলার বাদি হামিদা আক্তার জানান, গত ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ফেরদৌস বাহিনীর সহায়তায় হোয়ানকের লম্বাশিয়া এলাকায় তার স্বামী আবদুস সাত্তারকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা নেয়নি। অবশেষে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হন তারা। রিট পিটিশন নং-৭৭৯৩/১৭ মূলে ‘ট্রিট ফর এফায়ার’ হিসেবে গণ্য করতে আদেশ দেন বিচারক। সেই আদেশের আলোকে তিনি একই বছরের ১৭ জুলাই কক্সবাজারের পুলিশ সুপারকে লিখিত দরখাস্ত দেন। এ ঘটনায় সেই সময় থানায় মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। 

(দৈনিক প্রথম আলো)


শোক ঢেকে যায় আত্মপ্রচারে

শোক ঢেকে যায় আত্মপ্রচারে


বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে করোনাকালেও থেমে নেই আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের আত্মপ্রচার। কারও কারও ছবির বিশালত্বে হারিয়ে গেছেন জাতির পিতা ও ১৫ আগস্টের শহীদরা। শহীদদের প্রতি ‘শ্রদ্ধাঞ্জলি’র ছবির চেয়ে বড় বড় ছবির পোস্টার, বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন রাজধানীর প্রায় সব জায়গায়। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, ধানমন্ডি ৩/এ দলীয় সভানেত্রীর কার্যালয়ের সামনেসহ নগরীর বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি আবাসিক ভবন, হাসপাতাল, পাড়া-মহল্লার দেয়াল ও পিলারে জাতির পিতাকে নিয়ে বিনম্র শ্রদ্ধাসংবলিত পোস্টার-ব্যানার আর লেখনী শোভা পাচ্ছে। উঠতি, পাতি, মহানগরী, থানা এবং ওয়ার্ড নেতাদের এ আত্মপ্রচার দেখে মনে হয় ‘শোক ঢাকা পড়েছে পোস্টারে’। বিশেষ করে ঢাকা-৫ ও ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচন উপলক্ষে শোকের শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাতে সম্ভাব্য প্রার্থীদের আস্থাভাজন হতে গিয়ে কেউ কেউ জাতির পিতার ছবির চেয়ে নিজের ছবি বড় করে ছাপিয়েছেন। অনেকেই বিষয়টিকে দৃষ্টিকটু বলে মন্তব্য করেছেন।

এ প্রসঙ্গে বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘যারা শোকের আত্মপ্রচারের নামে বঙ্গবন্ধুর প্রতি অবমাননা করছেন এটা খুবই ঘৃণিত কাজ। এটা আওয়ামী লীগকেই বন্ধ করতে হবে। দীর্ঘদিন দল ক্ষমতায় থাকায় অনেক কাউয়া এখন আওয়ামী লীগে ঢুকে পড়েছে। এ ব্যাপারে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।’

রাজনৈতিক গবেষক ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘যারা নানা অনুষ্ঠান কিংবা শোক দিবসের নামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ছোট করে নিজেদের ছবি বড় করেন তারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শচ্যুত। এটা অত্যন্ত গর্হিত কাজ। শুধু মুজিবকোট পরলেই জাতির পিতার আদর্শের হওয়া যায় না। জাতির পিতা যে ত্যাগ-সাধনা ও আদর্শ রেখে গেছেন তা অন্তরে ধারণ করতে হবে। আত্মপ্রচারের নামে তারা কোনো সুবিধা আদায়কারী কিনা তা খতিয়ে দেখা উচিত।’

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ব্যবহারে একটা নীতিমালা থাকা উচিত। জাতির পিতা কিংবা পরিবারের কারও নামে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা কোনো স্থাপনা করতে গেলে যেমন বঙ্গবন্ধু ট্রাস্ট থেকে অনুমোদন নিতে হয়, তেমনি তাঁর ছবির ব্যবহারের ক্ষেত্রেও এমন নীতিমালা করা উচিত। তা না হলে রিজেন্টের সাহেদের মতো ব্যক্তিরা নিজেদের অপকর্ম জায়েজ করার জন্য প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে কিংবা স্থানীয় প্রশাসনকে চাপে রাখতে অথবা অনৈতিক সুবিধা আদায়ে এসব করবে। তাদের উদ্দেশ্য শোকের শ্রদ্ধাঞ্জলি নয়, আত্মপ্রচার ও অপকর্ম করা। এটা বন্ধ করা উচিত।’

গতকাল সরেজমিন ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে, ধানমন্ডি ৩/এ দলীয় সভানেত্রীর কার্যালয়, পল্টন, ফার্মগেট, মোহাম্মদপুর, শেরেবাংলানগর, মতিঝিল, যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, উত্তরা, উত্তরখান, দক্ষিণখান, খিলক্ষেতসহ বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতাদের এ আত্মপ্রচারের ছবি, বিলবোর্ড, পোস্টার, ব্যানার ফেস্টুন ও তোরণ চোখে পড়ে। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শতাধিক পোস্টার রয়েছে। এর মধ্যে নিজের ছবি সবচেয়ে বড় করে সাঁটিয়েছেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ মৎস্যজীবী লীগের সাবেক সভাপতি শাহজাহান হাওলাদার। সেখানে জাতির পিতা ও বঙ্গমাতা কিংবা ১৫ আগস্টের শহীদদের ছবি আকারে অনেক ছোট।

ঢাকা-৫ আসনের যাত্রাবাড়ী-ডেমরা রোডের ৬৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয় থেকে কিছু দূর যেতেই ডান পাশে চোখে পড়ে একটি বিশাল ব্যানার। বাঁশের সঙ্গে টানানো এ ব্যানারে লেখা আছে- ‘১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস-জাতির পিতাসহ সকল শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি’। ব্যানারের বাঁ পাশে মাঝারি আকারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ছবি। ক্ষুদ্র আকারে দেওয়া হয়েছে ১৫ আগস্ট নিহত সব শহীদের ছবি। আর ডান পাশে সবচেয়ে বড় আকারে দেওয়া হয়েছে মেহেরিন মোস্তফা দিশির ছবি। ছবির সৌজন্য : আহমেদ আহসান, ৬৩ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ। ঢাকা-৫ এলাকায় এমন অনেকের ছবিই এখন শোকের শ্রদ্ধাঞ্জলির নামে আত্মপ্রচার। ডেমরা-স্টাফকোয়ার্টারের রাস্তায় বেশ কয়েকটি তোরণ স্থাপন করা হয়েছে, যা রীতিমতো চোখে পড়ার মতো। এ তোরণের ওপর লেখা আছে- ‘জাতীয় শোক দিবসে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি। আসন্ন ঢাকা-৫ উপনির্বাচনে কাজী মনিরুল ইসলাম মনু (বিএ) ভাইকে এমপি হিসেবে দেখতে চাই।’ বাঁ পাশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি। ডান পাশে মনিরুল ইসলাম মনুর বড় ছবি। মনুর ছবির ওপরে খুব ছোট আকারে দেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস এবং ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের ছবি। তোরণের নিচে কমপক্ষে ১০ ফুট আকারে মনুর ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছবিতে শোকের আবহ চোখে পড়েনি। ডেমরা-যাত্রাবাড়ী এলাকায় এমন বিলবোর্ড ও পোস্টার চোখে পড়ে যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ মুন্না, মেহেরিন মোস্তফা দিশি, ৭০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আতিকুল ইসলাম আতিক, রিপনসহ ডজনখানেক মনোনয়নপ্রত্যাশীর। কারও ছবি কর্মী-সমর্থকরা সাঁটিয়েছেন।

ধানমন্ডিতে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে অনেক শ্রদ্ধাঞ্জলির পোস্টার ও ফেস্টুন চোখে পড়ে। এর মধ্যে একটা ফেস্টুনে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও কেসি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আলহাজ মো. খসরু চৌধুরীর ছবিটি শোভা পাচ্ছে। ফেস্টুনের প্রায় অর্ধেকজুড়েই তার ছবি। খসরুর এ ছবি খিলক্ষেত, উত্তরা, উত্তরখান, দক্ষিণখানসহ রাজধানীজুড়েই শোভা পাচ্ছে।

একইভাবে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে বঙ্গবন্ধু জাতীয় যুব পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির একটি বড় বিলবোর্ড সাঁটানো হয়েছে। এখানেও জাতির পিতার চেয়ে সংগঠনের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জামাল এবং বন ও পরিবেশ সম্পাদক রায়হান আহম্মেদের ছবি বড় করে দেওয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি সেখানে কিছুটা দেখা গেলেও ১৫ আগস্ট নিহত অন্য শহীদদের ছবি খুবই ছোট। ১৫ আগস্টের শহীদ ছাড়া আরও তিনজনের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে এ বিলবোর্ডে। তাদের কোনো পরিচয় লেখা হয়নি। একইভাবে পল্টন থানা মৎস্যজীবী লীগ নেতা শামীম হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক এস এম মোহনসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতার আত্মপ্রচার চোখে পড়ে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে শোভা পাচ্ছে ‘নাইন স্টার যুব সংঘ, ১৩ নম্বর ওয়ার্ড বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের ব্যানারের লেখা একটি ‘প্যানা পোস্টার’। সেখানেও শহীদদের চেয়ে নেতাদের আত্মপ্রচারই বেশি। শুধু দলীয় অফিসই নয়, সরকারি বিভিন্ন অফিসেও এমন আত্মপ্রচার চোখে পড়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা ভবনে একটা ব্যানার সাঁটিয়েছেন সিপিই সরকারি কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম ভুইয়া ও সাধারণ সম্পাদক এ কে এম নজরুল ইসলাম। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘যারা শোকের মাসে শ্রদ্ধাঞ্জলির নামে নিজেদের আত্মপ্রচার করেন, জাতির পিতা ও শহীদদের ছবি ছোট করে নিজেদের ছবি বড় করেন তারা বিকৃত মানসিকতার মানুষ। আসলে তারা অন্তরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাস করেন না। নামেই তারা আওয়ামী লীগ। দলের পক্ষ থেকে বারবার এমন আত্মপ্রচার বন্ধ করতে বলা হয়েছে। কিন্তু যারা এখনো শোনেননি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। 

(বি/ডি প্রতিদিন)



স্থল বন্দরগুলোর কাজ আধুনিক করতে নীতিমালা করার সুপারিশ

স্থল বন্দরগুলোর কাজ আধুনিক করতে নীতিমালা করার সুপারিশদেশের স্থল বন্দরগুলোর কার্যক্রম নিরবিচ্ছন্ন রাখতে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির একটি নীতিমালা প্রয়ণের সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। একইসঙ্গে প্রতিবেশী দেশের বন্দরসমুহের সুবিধার সাথে সামাঞ্জস্য রেখে দ্রুত নীতিমালা সম্পন্ন করার জন্য সুপারিশ করা হয়।

সংসদ ভবনে বুধবার (২২ আগস্ট) অনুষ্ঠিত নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির  বৈঠকে এসব সুপারিশ করা হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম। কমিটির সদস্য শাজাহান খান, মোঃ মজাহারুল হক প্রধান, মাহফুজুর রহমান, মোঃ আছলাম হোসেন সওদাগর এবং এস এম শাহজাদা বৈঠকে অংশ নেন।

সংসদের গণসংযোগ বিভাগ জানায়, বৈঠকে নৌ-পরিবহন অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক চলমান প্রকল্পসমূহের বাস্তবায়ন অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়। কমিটি প্রকল্পসমূহের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য সুপারিশ করে। পাশাপাশি দেশের স্থল বন্দরগুলোর কার্যক্রম আধুনিকায়ন ও নিরবিচ্ছিন্নভাবে পরিচালনার জন্য সুযোগ সুবিধার একটি নীতিমালা প্রণয়নের ওপর গুরত্বিারোপ করে। বৈঠকে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিভিন্ন সংস্থা প্রধানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

 

বিডি-প্রতিদিন/সিফাত আব্দুল্লাহ


গুজবে কান দিয়ে জীবন গেল হাজারো মানুষের

গুজবে কান দিয়ে জীবন গেল হাজারো মানুষের

আমেরিকান জার্নাল অব ট্রপিকাল মেডিসিন অ্যান্ড হাইজিনে প্রকাশিত এক গবেষণার ফলাফল থেকে জানা যাচ্ছে যে, হাসপাতালে এমন হাজারো রোগীর চিকিৎসা করতে হয়েছে, যাদের বড় একটি অংশ সামাজিক নেটওয়ার্কগুলোতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া গুজবে বিশ্বাস করেছিলেন। 

২০১৯ এর ডিসেম্বর থেকে ২০২০ এপ্রিল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া, থাইল্যান্ড এবং জাপানসহ বিভিন্ন দেশের সংগ্রহ করা তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন আন্তর্জাতিক একদল বিজ্ঞানী। এখানে উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, ভারতে করোনা সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পেতে গোমূত্র বা সার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।

সৌদি আরবে উটের প্রস্রাবকে ম্যাজিক ওষুধ হিসেবে বলা হয়েছিল। এমনকি শরীরকে জীবাণুমুক্ত করতে অত্যন্ত ঘনীভূত অ্যালকোহল ব্যবহার করায় বিশ্বব্যাপী ৮০০ মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে। প্রায় ছয় হাজার মানুষকে হাসপাতালে যেতে হয়েছে করোনা আতঙ্কে মিথানল পান করে। অন্ধ হয়ে গেছেন ৬০ জন। 

বিজ্ঞানীরা ৮৭টি দেশের ২৫ টি ভাষার মোট দুই হাজার ৩০০ রিপোর্ট নিয়ে গবেষণাটি করেছেন। গবেষক দল ইন্টারনেটে করোনাবিষয়ক ভুল তথ্যগুলো মনিটর করার জন্য বিভিন্ন দেশের সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে দাবি জানান। সঠিক তথ্য প্রকাশের জন্য স্যোশাল মিডিয়া সংস্থাগুলোর সাথেও কাজ করার কথা বলেন তারা। 

সূত্র : ডয়েচে ভেলে

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ



ভুল করে নিজেদের শহরেই রকেট হামলা চালালো ইসরায়েল

ভুল করে নিজেদের শহরেই রকেট হামলা চালালো ইসরায়েল
হেলিকপ্টার থেকে ভুল করে নিজেদের একটি শহর লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। তবে নিজেদের শহর লক্ষ্য করে ইসরায়েলি বাহিনী যে রকেটটি নিক্ষেপ করেছে তা বিস্ফোরিত হয়নি বলে জানা গেছে।ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, শহরের যেখানে রকেটটি পড়েছে সেখানে তা বিস্ফোরিত হলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতো।মাত্র কয়েকদিন আগেই ইসরায়েলি বাহিনী লেবানন সীমান্তে ভুল করে নিজেদের একটি ড্রোন ভূপাতিত করে। এবার গাজায় একের পর এক হামলার মধ্যেই নিজেদের একটি শহরেই রকেট ছুড়ল ইসরায়েল।

বিশ্লেষকদের ধারণা, লেবাননের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর পাল্টা হামলার ভয় থেকে সৃষ্ট অস্থিরতার কারণে ইসরায়েলি সেনারা এ ধরণের ভুল করছে।


বিডি-প্রতিদিন/সিফাত আব্দুল্লাহ




ভারত–চীন সীমান্তে আর ঢিলেমি নয়: বিপিন রাওয়াত

বিপিন রাওয়াতবিপিন রাওয়াত

প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় আর কোনো ঢিলেমি নয়। বছরভর ভারত–চীন সীমান্তে ভারতীয় বাহিনী সতর্ক থাকবে। প্রচণ্ড ঠান্ডায়ও। সম্প্রতি ভারতীয় সংসদীয় কমিটির সদস্যদের এই কথা জানিয়েছেন দেশের চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস) বিপিন রাওয়াত। তিনি বলেন, লাদাখে চীনা সেনাদের পিছু হটতে যতই সময় লাগুক, ভারতীয় বাহিনী সজাগ ও সতর্ক থাকবে। প্রয়োজনে বহুদিন থাকতে হলেও থাকবে। ভারতীয় বাহিনী সেই ব্যবস্থা করে ফেলছে। সংবাদ সংস্থা এএনআই মঙ্গলবার এই খবর জানিয়েছে।

ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান যখন দেশের সুরক্ষায় এই আশ্বাস দিচ্ছেন, সেই সময় চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান জানাচ্ছেন, ভারত–চীন বিতর্কিত সীমান্ত এলাকায় শান্তিরক্ষা ও পারস্পরিক বিশ্বাস দৃঢ় করাই চীনের প্রধান কূটনৈতিক লক্ষ্য। কোভিড–১৯ যখন সবার মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেই সময় চীনা কূটনীতির অগ্রাধিকার হলো ভারতসহ জাপান, ইইউ, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন। তিনি বলেন, ভারত ও চীন দুই দেশেরই উচিত সীমান্তে শান্তি ও সুস্থিতি রক্ষায় যৌথভাবে কাজ করা। পারস্পরিক স্বার্থ রক্ষা করা। গত সোমবার রাতে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের এক বিবৃতিতে বলা হয়, চীন তার প্রতিবেশীসহ অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের সঙ্গে পারস্পরিক স্বার্থ ও আস্থা–ভরসা বৃদ্ধিতে কাজ চালিয়ে যাবে।

সংসদীয় কমিটির সদস্যরা লাদাখে সাম্প্রতিক ভারত–চীন সীমান্ত উত্তেজনার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সিডিএসকে প্রশ্ন করেন। ওই বিস্তীর্ণ এলাকায় গত এপ্রিল–মে মাস থেকে চীন পরিকল্পনা করে তাদের শক্তিবৃদ্ধি ঘটিয়ে গেছে। প্রায় ৪০ হাজার সৈন্য তারা ওই এলাকায় মোতায়েন করেছে। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর দুই দেশই এখন সেনা অপসারণের প্রক্রিয়া জারি রেখেছে। ভারতের দাবি মেনে চীন এখনো পিছু হটেনি। কত দিনে তারা সেনা সরাবে, তার কোনো ইঙ্গিত এখনো নেই। এই অবস্থায় ভারত কোনো ঝুঁকি নিতে রাজি নয়। সিডিএস সেই কথাই সংসদীয় কমিটির সদস্যদের জানিয়ে বলেছেন, প্রয়োজনে যদি দীর্ঘ সময় থাকতে হয়, ভারতীয় বাহিনী তা–ই করবে। সে কারণে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের কাজ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চালানো হচ্ছে। লাদাখ সেক্টরে ভারত ইতিমধ্যেই অতিরিক্ত দুই ডিভিশন সেনা মোতায়েন করেছে।

ভারত–চীন সীমান্ত পরিস্থিতির ওপর তীক্ষ্ণ নজর যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর ‘চায়না এরোস্পেস স্টাডিজ ইনস্টিটিউটের (সিএএসআই)। তারা জানিয়েছে, লাদাখে ভারত–চীন সীমান্ত উত্তেজনা ও সংঘর্ষের পর থেকে চীন তাদের সব ধরনের উপস্থিতি বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। যুদ্ধবিমানের সংখ্যা দ্বিগুণ করেছে।

লাদাখ সীমান্তবর্তী এলাকায় চীনের সিনকিয়াং অঞ্চলের হোটান বিমান ঘাঁটিতে রাখা হয়েছে ৩৬টি যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ২৪টি রাশিয়ার তৈরি জে–১১ ফ্ল্যাঙ্কার ফাইটার যুদ্ধবিমান, ৬টি পুরানো জে–৮ ফাইটার,২টি ওয়াই ৮জি পরিবহন বিমান, ২টি কেজে–৫০০ আরলি ওয়ার্নিং বিমান, ২টি এমআই–১৭ হেলিকপ্টার ও একগাদা সিএইচ–৪ ড্রোন। জুন মাসের সংঘর্ষের আগে ওখানে মাত্র ১২টি ফ্ল্যাঙ্কার যুদ্ধবিমান ছিল।

ভারতও তার সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়েছে। প্রথম দফার রাফাল যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে। রাখা হয়েছে সুখোই–৩০, মিরাজ ও মিগ–২৯। নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সড়ক ও অন্যান্য অবকাঠামোও তৈরি করা হচ্ছে দ্রুত। 

(দৈনিক প্রথম আলো)



আমেরিকাকে চীনের হুঁশিয়ারি

আগুন নিয়ে খেললে নিজেরাই পুড়ে মরবেsharethis sharing button

তাইওয়ানের সঙ্গে যেকোনো রকমের আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার বিষয়ে মার্কিন সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে চীন। আমেরিকার স্বাস্থ্যমন্ত্রী অ্যালেক্স আজারের তাইওয়ান সফরের প্রেক্ষাপটে বেইজিং এই হুঁশিয়ারি দিল। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান গতকাল নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ের সময় বলেন, ‘যারা আগুন নিয়ে খেলবে তারা নিজেরাই পুড়ে মরবে’।
গত রোববার মার্কিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী অ্যালেক্স আজার তিনদিনের সফরে তাইওয়ান যান। ১৯৭৯ সালের পর এই প্রথম আমেরিকার কোনো শীর্ষ পর্যায়ের মন্ত্রী তাইওয়ান সফর করলেন। ওই বছর তাইওয়ান ব্রিটিশ শাসন থেকে চীনের অধীনে ন্যস্ত হয়। স্বশাসিত তাইওয়ান দ্বীপের ওপর আমেরিকা চীনের সার্বভৌমত্ব স্বীকার করে আসছে। তবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সময় তাইওয়ান ইস্যুতে আমেরিকা অনেকটা আগ্রাসী নীতি গ্রহণ করেছে যা চীনের জন্য বিরক্তির কারণ। সূত্র : পার্স টুডে।


বাস ভাড়ায় নৈরাজ্য

কিছু গণপরিবহন ভাড়া ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে না : ওবায়দুল কাদের বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহারের দাবি রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ও যাত্রীকল্যাণ সমিতিরsharethis sharing button

কথা ছিল স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চলবে। সিট খালি থাকবে অর্ধেক। স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরলে বাড়তি ভাড়া আদায়ও বন্ধ হবে। কোনো কথাই রাখেননি বাসসহ বিভিন্ন গণপরিবহনের মালিক-শ্রমিকরা। আদায় করা হচ্ছে বাড়তি বাড়া। কোথাও ৬০ শতাংশ, কোথাও একশ’ শতাংশ। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি না মানা এবং বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে, যা প্রত্যাশিত নয়। পরিবিহন মালিক সমিতি ও শ্রমিক সংগঠনগুলোকে এ বিষয়ে আমি বলেছি। সর্বশেষ গতকাল বুধবার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে বলেন, কিছু কিছু গণপরিবহন করোনাকালের জন্য গৃহীত ব্যবস্থা হিসেবে সমন্বয় করা ভাড়া ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে না বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।

করোনার সংক্রমণ এড়াতে সীমিত সংখ্যক যাত্রী নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চলাচলে কিছু শর্ত দিয়ে ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়েছিল সরকার। ৬৬দিন লকডাইন শেষে গত ১ জুন থেকে শর্তসাপেক্ষে গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়। কিন্তু সে নিয়ম মালিক-শ্রমিক কেউই মানছে না। শুরু থেকেই ‘যাত্রী কম’ এই দোহাই দিয়ে -৬০ থেকে ১০০ শতাংশ অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে গাদাগাদি করে যাত্রী তোলা হচ্ছে। আর হ্যান্ডস্যানিটাইজার বা গাড়ি স্প্রে করার কথা পরিবহন শ্রমিকরা ভুলেই গেছেন। শুরুতে কয়েকদিন হ্যান্ড স্যানিটাইজারের বদলে দেয়া হতো রঙিন পানি।

করোনার পরিস্থিতির উন্নতিন সাথে সাথে যান চলাচল ও যাত্রীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। সেই সুযোগে আগের মতোই অতিরিক্ত যাত্রী বহন শুরু করে গণপরিবহনের মালিক শ্রমিকরা। তারা ভুলে যায় সরকারের দেয়া শর্তাবলীসহ স্বাস্থ্যবিধির কথা। বেশি ভাড়ার বিনিময়ে দুই সিটে একজন বসানোর নিয়ম ভেঙে এখন আসন ভর্তির পর দাঁড় করিয়েও যাত্রী নেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে ভাড়া না কমিয়ে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করার দিকেই বেশি মনোযোগী বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষও (বিআরটিএ) রহস্যজনক কারণে নীরব। মাঝখানে বাড়তি যাত্রী ও ভাড়ার যাতাকলে পিষ্ঠ হচ্ছেন যাত্রীরা।

সর্বশেষ ২০১৬ সালে ঢাকার বাস ও মিনিবাসের নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। সে সময় নির্ধারিত ভাড়া ছিল কিলোমিটারপ্রতি এক টাকা ৭০ পয়সা। কিন্তু যাত্রীদের অভিযোগ ছিল নির্ধারিত ভাড়ার চেয়েও বেশি ভাড়া আদায়ের। গেটলক, সিটিংসার্ভিস, বিরতিহীন, সময় নিয়ন্ত্রণ ও লোকাল নামে কোনো কিছু ছিল না ভাড়াবিষয়ক প্রজ্ঞাপনে। কিন্তু গেটলক বা সিটিং সার্ভিসের নামে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে থাকেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা।

এদিকে করোনা পরিস্থিতিতে ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়ানোর ফলে কিলোমিটারপ্রতি ভাড়া নির্ধারিত হয় দুই টাকা ৭২ পয়সা। অথচ কিলোমিটারপ্রতি দুই টাকা ৭২ পয়সা ভাড়া হিসাবের চেয়েও বেশি আদায় করা হচ্ছে যাত্রীদের কাছ থেকে। এর আগে স্বল্প দূরত্বের যাত্রীদের সর্বনিম্ন ভাড়া ছিল সাত টাকা। তবে লোকাল সার্ভিসে এটি ছিল পাঁচ টাকা। কিন্তু এখন লোকাল বাসেও সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।

গতকাল রাজধানীর কয়েকটি এলাকার প্রতিটি বাস স্টপেজে দেখা গেছে যাত্রীদের চাপ। একটা বাস আসলেই তাতে গাদাগাদি করে উঠছে যাত্রীরা। অফিস সময়ের আগে ও পরে এ চাপ বেশি দেখা গেছে। বাসগুলোর সব সিট যাত্রীতে পূর্ণ দেখা গেছে। এরপর দাঁড় করিয়েও নেওয়া হয়েছে যাত্রী। কিন্তু বেশি ভাড়াও ঠিকই নেওয়া হচ্ছে। গুলিস্তান থেকে শনিরআখড়া বা রায়েরবাগের সরকার নির্ধারিত ভাড়া ৭টাকা। ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে চলাচলকারি বাসগুলোতে শুরু থেকেই এ ভাড়া ১৫ টাকা। এখন নেয়া হয় ৩০ টাকা। অথচ বাসের কোনো আসনই খালি থাকে না। ভুক্তভোগি যাত্রীরা জানান, ভাড়া নিয়ে সরকারি কোনো প্রজ্ঞাপন জারি হলে সাথে সাথে তা কার্যকর হয়। অথচ যে শর্তে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে সেই আসন খালি রাখছে না কেউই। রুবেল নামে এক যাত্রী জানান, বাসাবো থেকে কুড়িল পর্যন্ত অন্য সময় ২০ টাকা ভাড়া লাগতো। এখন ৩০ টাকা দিতে হচ্ছে। বেশি ভাড়া দেওয়ার পরও উপচে পড়া ভিড় থাকে প্রতিটি বাসে। আগের মতো স্বাভাবিক রেটে ভাড়া দিতে চাইলে কন্ডাক্টর-হেলপারদের হাতে অপমান-অপদস্থ হতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। যাত্রীদের অভিযোগ, স্বাস্থ্যবিধি ও ভাড়া বাড়ানোর শর্তের কথা বললে আপত্তিকর মন্তব্যসহ যাত্রীকে বাস থেকে নামিয়ে দিতে তৎপর হয় কন্ডাক্টর-হেলপাররা। তাদের কাছে আগের মতোই যাত্রীরা অসহায়। এরকম যে শুধু রাজধানীর সিটি সার্ভিসে হচ্ছে তা নয়, দূরপাল্লার বাসেও মানা হচ্ছে না কোনো স্বাস্থ্যবিধি। অথচ নেয়া হচ্ছে ৬০ থেকে একশ’ শতাংশ বর্ধিত ভাড়া। গেল ঈদে ঢাকার বাইরে থেকে ঢাকায় আসতে ৬০ শতাংশ অতিরিক্ত ভাড়া নিয়েছে সব কোম্পানীর বাস। অথচ বেশিরভাগ বাসই আসন খালি রাখেনি। গত সপ্তাহে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বগুড়া মহাসড়কে শত শত দূরপাল্লার বাস, মিনিবাসে গাদাগাদি করে যাত্রীদের ঢাকায় আসতে দেখা গেছে।

একইভাবে মিনিবাস, হিউম্যান হলার, টেম্পোসহ বিভিন্ন গণপরিবহনে ৪০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বেশি ভাড়া নিচ্ছেন মালিক-শ্রমিকরা। শনিরআখড়া থেকে নিউমার্কেট পর্যন্ত টেম্পুর ভাড়া আগে ছিল ৩০ টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৫০ টাকা। অথচ টেম্পুগুলোতে আগের মতোই ১০/১২জন করে যাত্রী তোলা হচ্ছে। জানতে চাইলে টেম্পু চালক আনোয়ার বলেন, টেম্পুতে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখার মতো জায়গা কই? ৬ জন করে যাত্রী নিলে পোষায় না উল্লেখ করে গুলিস্তান থেকে বাসাবোর রুটের চালক রিপন বলেন, এতদিন যাত্রী না পেয়ে লোকসান দিছি। এখন সেগুলো পুষিয়ে নিচ্ছি।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, করোনা সংকট রয়ে গেলেও দেশে এখন কোনো গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। যেসব শর্ত অনুসরণ করে বর্ধিত ভাড়া আদায়ের কথা বলা হয়েছিল, তার কোনোটাই মানা হচ্ছে না বাসগুলোতে। সেই পুরনো কায়দায় গাদাগাদি করে যাত্রী বহন করা হচ্ছে। আবার এই করোনাকালে ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য সরকারের বর্ধিত ৬০ শতাংশ ভাড়ার চেয়েও অধিকাংশ রুটে বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এতে করোনা সংকটে কর্মহীন ও আয় কমে যাওয়া দেশের সাধারণ মানুষের যাতায়াত দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।

অন্যদিকে, জনস্বার্থে গণপরিবহনের ৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার এবং পূর্বের ভাড়া বহালের দাবি জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। গতকাল বুধবার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. এ আই মাহবুব উদ্দিন আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া এবং নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান এক যুক্ত বিবৃতিতে এ দাবি জানান। এতে বলা হয়, বর্তমানে অধিকাংশ গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। যেসব শর্ত অনুসরণ করে বর্ধিত ভাড়া আদায়ের কথা বলা হয়েছিল- তার কোনোটিই মানা হচ্ছে না। গাদাগাদি করে যাত্রী বহন করা হচ্ছে। এমনকি সরকারের বর্ধিত ৬০ শতাংশের বেশি ভাড়াও আদায় করা হচ্ছে অনেক রুটে, বহু পরিবহনে।

বিআরটিএর মতে, ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল বাস মালিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে। স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না- এ ধরনের অভিযোগ আসায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানার আওতায় আনা হচ্ছে বাসকে। তবে ভাড়া কমানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। বিআরটিএর চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, নিয়ম অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত জোরদার করা হয়েছে। এ ছাড়া সব বিভাগীয় কমিশনারকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কঠোর হওয়ার জন্য। প্রতিদিন বহু মামলা করছেন ম্যাজিস্ট্রেটরা। এর পরও অভিযোগ আসছে। তিনি বলেন, ৬০ শতাংশ ভাড়া রহিত করার বিষয়ে এখনো আলোচনা হয়নি। (দৈনিক ইনকিলাব)


বৈরুতে বিস্ফোরণের পর ‘অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট’ নিয়ে দেশে তদারকি বাড়ল

লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনার পর বাংলাদেশেও অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট নিয়মানুযায়ী ব্যবহার ও গুদামজাত হচ্ছে কি না, তাতে তদারকি বাড়িয়েছে বিস্ফোরক অধিদপ্তর। যদিও বাংলাদেশে বিস্ফোরক তৈরির এ উপাদানটির আমদানির পরিমাণ খুবই কম।

লেবাননের রাজধানী বৈরুতে বন্দরের কাছে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের একটি গুদামে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর পণ্যটি আমদানি, পরিবহন ও গুদামজাতকরণে এখন অনেক বেশি সতর্ক অনেক দেশ। আন্তর্জাতিক নৌ সংস্থার নীতিমালা মেনে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের মতো দাহ্য ও বিস্ফোরক তৈরির উপাদান সমুদ্রপথে পরিবহন করতে হয়। আবার দেশে পরিবহন ও সংরক্ষণেও কঠোর নীতি অনুসরণ করার কথা বলা আছে।

কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, গত অর্থবছর চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে এ পণ্যটি আমদানি হয়েছে ৩৯৪ মেট্রিক টন। এর আগের ২০১৮–১৯ অর্থবছরে আমদানি হয় ৫১৮ টন, যা গত ছয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। সব মিলিয়ে গত ছয় বছরে ১ হাজার ৭৩৮ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট আমদানির হিসাব পাওয়া গেছে।

বন্দরের কর্মকর্তা জানান, অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, বিস্ফোরকসহ অতিবিপজ্জনক পণ্য বন্দর দিয়ে আমদানি হলেও তা রাখার সুযোগ নেই। চট্টগ্রাম বন্দরের পর্ষদ সদস্য মো. জাফর আলম প্রথম আলোকে বলেন, উচ্চমাত্রার দাহ্য, বিস্ফোরক জাতীয় পদার্থ বন্দর দিয়ে আমদানি হলেও বন্দরের গুদামে রাখা হয় না। জাহাজ থেকে নামানোর পরপরই প্রয়োজনীয় অনুমোদন নিয়ে তা খালাস নিতে হয়। এ ধরনের পণ্য ব্যবস্থাপনায় যাতে কোনো ঝুঁকি তৈরি না হয়, সে জন্যই এই ব্যবস্থা।

অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বিস্ফোরক তৈরির উপাদান। অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট সার হিসেবে, খনিতে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ফুয়েল বিস্ফোরক তৈরিতে এবং মেডিকেলে নাইট্রাস অক্সাইড উৎপাদনে ব্যবহৃত হয় বলে বিস্ফোরক অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। বিস্ফোরক আইনের অধীনে ২০১৮ সালে সরকার অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বিধিমালা প্রণয়ন করে। এই বিধিমালার আওতায় লাইসেন্স ছাড়া কেউ অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট আমদানি, খালাস, পরিবহন, ব্যবহার করার সুযোগ নেই। গুদামে রাখার জন্যও কঠোর নিয়মাবলি ও শর্ত রয়েছে।
সংস্থাটির হিসাবে, সরকারি প্রতিষ্ঠান মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড এবং বেসরকারি তিনটি প্রতিষ্ঠানের এই অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট আমদানির লাইসেন্স রয়েছে। খনিতে পাথর উত্তোলনে বিস্ফোরণের জন্য এটি ব্যবহৃত হয়। আর চিকিৎসায় ব্যবহৃত নানা উপাদান তৈরির জন্যও এটি ব্যবহৃত হয়।

বিস্ফোরক অধিদপ্তরের প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক মো. মঞ্জুরুল হাফিজ প্রথম আলোকে বলেন, এমনিতেই বিস্ফোরক জাতীয় পদার্থ নজরদারির মধ্যে রাখা হয়। বৈরুতের ঘটনার পর অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটসহ সব ধরনের বিস্ফোরক পণ্য যাতে অননুমোদিত গুদামে রাখা না হয়, সে জন্য সব বন্দর, জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। বিস্ফোরক অধিদপ্তর থেকেও তদারকি বাড়ানো হয়েছে। বৈরুতের মতো এখানে গুদামে পুরোনো অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট মজুত নেই।

সার কারখানায় ব্যবহার নেই

বাংলাদেশে সার কারখানার জন্য অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট আমদানি করতে হয় না। কাঁচামাল হিসেবে ইউরিয়া সার তৈরির জন্য কারখানায় অ্যামোনিয়া উৎপাদন করা হয়। বর্তমানে ইউরিয়া সার তৈরির পাঁচটি কারখানা রয়েছে দেশে।
আনোয়ারায় অবস্থিত চট্টগ্রাম ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের (সিইউএফএল) একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানান, ইউরিয়ার কাঁচামাল অ্যামোনিয়া কারখানায় তৈরি হয়। ট্যাংকের মধ্যে তরল অবস্থায় রাখা হয়। এ ক্ষেত্রে কঠোর নিয়মকানুন অনুসরণ করা হয়।
তবে অ্যামোনিয়া গ্যাসও বিপজ্জনক পণ্য। সংরক্ষণ করা না গেলে এটিতেও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ২০১৬ সালের ২২ আগস্ট চট্টগ্রামের আনোয়ারার রাঙাদিয়া গ্রামে ডিএপি সার কারখানার তরল অ্যামোনিয়া ট্যাংকের বিস্ফোরণে মানবিক বিপর্যয় হয়। সে সময় জেলা প্রশাসনের একটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্যাংকের নিরাপত্তার জন্য পাঁচ ধরনের সুরক্ষাযন্ত্র সময়মতো মেরামত না করা এবং রক্ষণাবেক্ষণে গাফিলতির কারণেই ট্যাংক দুর্ঘটনা ঘটে।
বন্দর কর্মকর্তারা জানান, বিপজ্জনক পণ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক নৌ সংস্থা প্রণীত ‘ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম ডেঞ্জারাস গুডস বা আইএমডিজি কোড’ আছে। এতে ৯টি ক্যাটাগরির পণ্যের একটি তালিকা রয়েছে। তাতে বিস্ফোরক, বিপজ্জনক গ্যাস, দাহ্য তরল ও কঠিন পদার্থ, বিষাক্ত, তেজস্ক্রিয় ও জারণ পদার্থ আছে। এ ছাড়া রাসায়নিক, সার, শিল্পের বিভিন্ন কাঁচামাল, বর্জ্য তেলসহ এ তালিকায় বিপুলসংখ্যক পণ্য রয়েছে। সাধারণত অন্য পদার্থের সংস্পর্শে এলে এসব পণ্য বিস্ফোরণ ছাড়াও স্বাস্থ্য ও পরিবেশের ক্ষতির কারণ হতে পারে। সে জন্য এসব পণ্য পরিবহন থেকে সংরক্ষণ পর্যন্ত সতর্কতা মেনে চলতে হয়। (দৈনিক প্রথম আলো)


বাংলাদেশে চীনা ভ্যাকসিনের পরীক্ষা নিয়ে সিদ্ধান্ত আগামী সপ্তাহে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। ফাইল ছবিস্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। ফাইল ছবি

বাংলাদেশে নতুন করোনাভাইরাসের চীনা ভ্যাকসিনের মানব পরীক্ষা করতে দেওয়ার বিষয়ে আগামী সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বুধবার অনলাইনে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে তিনি এ তথ্য জানান।

জাহিদ মালেক আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের মডার্নাসহ অন্য ভ্যাকসিন উদ্ভাবক কোম্পানিগুলো তাদের ভ্যাকসিন সরবরাহ করার জন্য বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এসব ভ্যাকসিনের জন্য যে দেশ আগে থেকে অ্যাডভান্স করে রাখছে, তাদের আগে ভ্যাকসিন সরবরাহ করবে কোম্পানিগুলো। আমরাও এসব কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চুক্তি করা কিংবা অ্যাডভান্স দেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আগামী সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের মিটিং ঠিক করা হয়েছে।’ তিনি জানান, সেই মিটিংয়ে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন যে চীনকে বাংলাদেশে তাদের ভ্যাকসিন পরীক্ষা করতে দেওয়া হবে কি না।

মন্ত্রী বলেন, ‘মিটিংয়ে এ বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হলে চীন বাংলাদেশে কত মানুষের ওপর পরীক্ষা করবে, এ ক্ষেত্রে চীন আমাদের কত টাকা দেবে, পরীক্ষা হলে চীন কী শর্তে ভ্যাকসিন দেবে—সেসব নিয়ে সিদ্ধান্তের পর চীনকে পরীক্ষা করতে দেওয়া হবে।’

গত ৪ আগস্ট সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে করোনা ভ্যাকসিন সংক্রান্ত এক সভা শেষে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান জানিয়েছিলেন, চীনের সিনোভ্যাক কোম্পানির ভ্যাকসিন পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সন্তোষজনক ফলাফল পাওয়া গেলে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য কর্মীদের ওপর প্রয়োগের জন্য অনুমোদন দেওয়া হবে। তিনি বলেছিলেন, ‘চীনের সিনোভ্যাক কোম্পানি তাদের আবিষ্কৃত ভ্যাকসিনের বাংলাদেশে তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের জন্য আইসিডিডিআর, বির মাধ্যমে আবেদন করেছে। আবেদনটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে এসেছে। এ বিষয়ে আজ আইসিডিডিআর,বির প্রতিনিধিদের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ে আমরা জরুরি বৈঠক করেছি।’

স্বাস্থ্য সচিব জানিয়েছিলেন, প্রাথমিকভাবে কোম্পানিটি দেশের কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড সাতটি হাসপাতালের ৪ হাজার ২০০ স্বাস্থ্য কর্মীর মাঝে এ পরীক্ষা সম্পন্ন করার কথা জানিয়েছে। (দৈনিক প্রথম আলো)


যুবককে ঢাকার ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে নির্যাতন করেন রাজশাহী রেঞ্জের এসপি

রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে এক যুবককে তুলে নিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কার্যালয়ে নির্যাতন ও ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে সাড়ে ৩ লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গোলাম মোস্তফা নামের ওই যুবক বলছেন, ডিবি কার্যালয়ে তাঁকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন রাজশাহী রেঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) বেলায়েত হোসেন। এসপি অবশ্য এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলেছেন।

ক্রসফায়ার ও মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে সাড়ে ৩ লাখ টাকা আদায় এবং শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগে মোস্তফা আজ বুধবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে মামলা করেছেন। ঢাকার মহানগর হাকিম মোহাম্মদ দিদার হোসাইন মোস্তফার মামলাটি আমলে নিয়ে তা তদন্ত করার জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার অভিযোগের ব্যাপারে রাজশাহী রেঞ্জের এসপি বেলায়েত হোসেন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাসা থেকে তুলে নিয়ে মোস্তফাকে ক্রসফায়ার কিংবা নির্যাতন করার অভিযোগে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। বরং আমার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা ধার নিয়েছেন মোস্তফা। সেই টাকা না দিয়ে আমাকে হয়রানি করছেন তিনি। সুষ্ঠু তদন্ত হলে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।’

গোলাম মোস্তফাকে ডিবি কার্যালয়ে নির্যাতন করা হয়েছে অভিযোগ উঠেছে। ছবি: সংগৃহীতগোলাম মোস্তফাকে ডিবি কার্যালয়ে নির্যাতন করা হয়েছে অভিযোগ উঠেছে। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী রেঞ্জের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) এ কে এম হাফিজ আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, এসপি বেলায়েতের বিরুদ্ধে আজ বুধবার ঢাকার সিএমএম আদালতে একটি মামলা হয়েছে বলে জানতে পেরেছেন। তবে বিস্তারিত কোনো তথ্য তিনি জানেন না। তবে অফিশিয়াল কাগজপত্র পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন।

এসপি বেলায়েতের বিরুদ্ধে অভিযোগ
এসপি বেলায়েত হোসেন। ছবি: সংগৃহীতএসপি বেলায়েত হোসেন। ছবি: সংগৃহীতগোলাম মোস্তফা তাঁর স্ত্রী-সন্তান নিয়ে রাজধানীর ধানমন্ডিতে থাকেন। নিজেকে ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দেওয়া মোস্তফা মামলার আরজিতে বলেন, এসপি বেলায়েতের সঙ্গে দুই বছর আগে পুলিশ সদর দপ্তরে তাঁর পরিচয় হয়। পরে দুজনের মধ্যে সু-সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত বছরের ১১ আগস্ট এসপি বেলায়েত তাঁর কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা ঋণ নেন। এসপি সেই টাকা ব্যাংক চেকের মাধ্যমে গত ১৫ মার্চ শোধ করেন। পরদিন মোস্তফা ব্যাংক থেকে সেই টাকা তুলে নেন। এসপি বেলায়েত গত ৪ এপ্রিল মোস্তফার বাসায় ডিবির একজন কর্মকর্তাকে পাঠান। ওই কর্মকর্তার মাধ্যমে মোস্তফার বাবাকে এসপি বেলায়েত বলেন, ৫ লাখ টাকা দিতে। টাকা না দিলে তাঁর ছেলের (মোস্তফা) বিপদ হবে। এরপর গত ১০ এপ্রিল মোস্তফার বাবা ৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন এসপি বেলায়েতকে। তবে সেই টাকা যাতে এসপি বেলায়েত তুলতে না পারেন, সে জন্য চেকটি ‘ব্লক’ করেন। এসপি বেলায়েত সেই টাকা তুলতে পারেননি।

মামলায় মোস্তফা দাবি করছেন, গত ৮ আগস্ট বেলা ১১ টার দিকে এসপি বেলায়েতের নেতৃত্বে ডিবির ১৫ থেকে ১৬ জন কর্মকর্তা তাঁর ধানমন্ডির বাসায় আসেন। পরে তাঁকে বাসা থেকে আটক করে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যান। তাঁর কাছে ২৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন এসপি বেলায়েত। ওই টাকা না দিলে ক্রসফায়ারের হুমকি দেওয়া হয়।

মোস্তফা প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করেন, ‘ডিবি কার্যালয়ে নেওয়ার পর পর আমাকে লোহার রড দিয়ে মারধর করেন এসপি বেলায়েত। টাকা না দিলে আমাকে ক্রসফায়ারে মেরে ফেলার হুমকি দেন তিনি।’

এসপি বেলায়েত প্রথম আলোকে বলেন, ‘মোস্তফার সঙ্গে আমার পরিচয় এ বছরের ফেব্রুয়ারি অথবা মার্চে। কোথা থেকে আমার নম্বর সংগ্রহ করে আমাকে ফোন দেয়। এরপর আর্থিক সংকটের কথা বলে আমার কাছ থেকে ৫ লাখ ঋণ নেয়। তাঁর কাছ থেকে আমার ঋণ নেওয়ার প্রশ্নেই ওঠে না। তাঁর নামে অন্য মামলাও আছে। এগুলো আমি জানতাম না।’ মোস্তফাকে নির্যাতনের কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোক। আমি একটা লোককে মারধর করে পার পাব? মোস্তফা আমার টাকা নিয়েছেন, আমি টাকা দিয়েছি। সেই টাকা শোধ না করে তা আত্মসাৎ করার জন্য আমার নামে আদালতে মিথ্যা মামলা ঠুকে দিয়েছেন।’

গোলাম মোস্তফাকে ডিবি কার্যালয়ে নির্যাতন করা হয়েছে অভিযোগ উঠেছে। ছবি: সংগৃহীতগোলাম মোস্তফাকে ডিবি কার্যালয়ে নির্যাতন করা হয়েছে অভিযোগ উঠেছে। ছবি: সংগৃহীতডিবি কার্যালয়ে নেওয়ার কথা স্বীকার
ডিবির সহকারী কমিশনার মাহবুবুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, এসপি বেলায়েত হোসেন স্যার মোস্তফা নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৭ আগস্ট ধানমন্ডি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। একই সঙ্গে তিনি ডিবিতে একটি অভিযোগ দেন। সেই অভিযোগের সূত্র ধরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে ডিবির একটি দল গত ৮ আগস্ট মোস্তফার ধানমন্ডির বাসায় যান। সঙ্গে সেদিন ধানমন্ডি থানার পুলিশও ছিল। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মোস্তফাকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। তবে মোস্তফাকে কেউ মারধর করেছেন বলে তাঁর জানা নেই।

ধানমন্ডি থানার ওসি মো. ইকরাম আলী মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর থানায় বেলায়েত হোসেন নামের এক ব্যক্তি জিডি করেন। সেই জিডির তদন্ত করছেন থানার একজন কর্মকর্তা। তাঁর জানামতে, জিডির ভিত্তিতে কাউকে আটক করতে হলে আদালতের অনুমতি লাগে। তাঁর থানা মোস্তফা নামের কাউকে আটকও করেননি কিংবা জিজ্ঞাসাবাদও করেনি।

মোস্তফার বাবা গোলাম মোহাম্মদ প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, এসপি বেলায়েত হোসেন সেদিন ডিবি পুলিশ এনে তাঁর সামনে তাঁর ছেলে মোস্তফাকে মারধর করেন। থানায় নিয়েও নির্যাতন করেন।

মোস্তফা দাবি করেন, তাঁর স্ত্রীর নম্বরে ফোন দিয়ে এসপি বেলায়েত সেদিন বারবার টাকা আনার জন্য চাপ দিতে থাকেন। সেদিন সন্ধ্যায় ডিবি কার্যালয়ে গিয়ে এসপি বেলায়েতের হাতে সাড়ে ৩ লাখ টাকা তুলে দেন তাঁর স্ত্রী পায়েল। যার রেকর্ড তাঁদের হাতে আছে।

ডিবির সহকারী কমিশনার মাহবুবুল আলম জানান, সেদিন ডিবি অফিসে গিয়ে মোস্তফার স্ত্রী তাঁর কাছে ৫০ হাজার টাকা দেন। সেই টাকা এসপি বেলায়েত হোসেনের পাওনা টাকা।

এসপি বেলায়েত ৫০ হাজার টাকা পাওয়ার কথা প্রথম আলোর কাছে স্বীকার করেন। তিনি এটাকে তাঁর পাওনা টাকা বলে উল্লেখ করেন। এসপি বলেন, বাকি টাকা ১৩ আগস্ট দেওয়ার অঙ্গীকার করে মোস্তফা এখন আদালতে মিথ্যা মামলা করলেন। (দৈনিক প্রথম আলো)


আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলে নতুন নিষেধাজ্ঞা, রাত থেকে কার্যকর


বিমানবন্দরগুলোতে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। মঙ্গলবার (৭ জুলাই) রাত থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা চলবে।

এ বিষয়ে বেবিচকের ফ্লাইট স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড রেগুলেশন বিভাগের সদস্য গ্রুপ ক্যাপ্টেন এম জিয়াউল কবির স্বাক্ষরিত এক সার্কুলারে বলা হয়েছে, করোনার প্রাদুর্ভাব এড়াতে ৭ জুলাই থেকে (৬ জুলাই রাত ১২টা ১ মিনিট) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বাহরাইন, ভুটান, হংকং, ভারত, কুয়েত, মালদ্বীপ, নেপাল, ওমান, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক যাত্রী পরিবহনের (কমার্সিয়াল প্যাসেঞ্জার ফ্লাইট) ফ্লাইটগুলো বাংলাদেশের কোনো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে পারবে না। তবে দেশগুলো থেকে কার্গো, বিশেষ ফ্লাইট ও এয়ার এ্যাম্বুলেন্স অবতরণ করতে পারবে।

ফ্লাইট চলাচলের বিষয়ে ১৮ জুন বেবিচকের জারি করা সর্বশেষ সার্কুলারে নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে মালয়েশিয়া, শ্রীলংকা ও তুরস্কের নাম ছিল। তবে সম্প্রতি নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে এই দেশগুলোর এয়ারলাইন্সকে বাংলাদেশে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দেয়া হয়েছে। অনুমতিপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে তুরস্কের টার্কিশ এয়ারলাইন্স, মালয়েশিয়ার মালিন্দো এবং শ্রীলংকান এয়ারলাইন্স।

আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলে ২১ মার্চ প্রথমবারের মতো নিষেধাজ্ঞার জারি করে বাংলাদেশ। বর্তমানে এই মালয়েশিয়া, শ্রীলংকা, তুরস্ক ছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, যুক্তরাজ্যের লন্ডন, কাতারের দোহা এবং চীন রুটে ফ্লাইট চলাচলে বেবিচকের অনুমতি রয়েছে।   [বিডি-প্রতিদিন]


সীমান্ত এলাকা থেকে পিছু হটলো ভারত-চীনের সেনারা

সীমান্ত এলাকা থেকে পিছু হটলো ভারত-চীনের সেনারা

সীমান্তে উত্তেজনার মধ্যে পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকা থেকে কিছুটা পিছিয়ে সেনা সরিয়েছে ভারত ও চীন। উত্তেজনা কমাতে ‘বাফার জোন’ তৈরির উদ্দেশ্যেই এই পদক্ষেপ বলে জানা গেছে। খবর আনন্দবাজারের।

জানা গেছে, গালওয়ানে প্রায় এক-দু’কিলোমিটার পিছিয়েছে চীন সেনা। তবে গালওয়ান নদীর তীরে এখনও পিপলস লিবারেশন আর্মির সাঁজোয়া গাড়ি রয়েছে।

ভারতীয় বাহিনীও আগের অবস্থান থেকে কিছুটা পিছিয়ে এসেছে। গত ২২ এবং ৩০ জুন দুই সেনাবাহিনীর মধ্যে বৈঠকের পর এই সেনা পিছানো হলো।

এরআগে গত ১৫ জুন গালওয়ানে ভারত-চীনা সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয়। চীনেরও সেনা হতাহত হয়।

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত



পিয়নের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৩০ কোটি টাকা

পিয়নের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৩০ কোটি টাকা

ফাইল ছবি

লিবিয়ায় মানব পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িতদের নজরদারিতে রেখেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তারা দেশটিতে মানব পাচারের ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে। ৩৬ জন পাচারকারীকে গ্রেফতারের মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদে বিভিন্ন তথ্য বের হয়ে আসছে। এসময় গ্রেফতার হওয়া একটি এজেন্সির পিয়নের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২০-৩০ কোটি টাকা রয়েছে বলে জানতে পেরেছেন সিআইডির তদন্তকারীরা।

আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি হেডকোয়ার্টার্সে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য দিয়েছেন সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান। 

সিআইডির কার্যক্রমের বিষয়ে ব্রিফিংয়ে লিবিয়ার প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, লিবিয়ায় বাংলাদেশের ২৬ জন নিহত হয়েছেন। ১১ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় বাংলাদেশের বিভিন্ন থানায় ২৬টি মামলা হয়েছে। যার মধ্যে ১৫টি মামলার তদন্ত করছে সিআইডি। 

এসব মামলায় এ পর্যন্ত ৬৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্য সিআইডি ৩৬ জনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের মধ্যে একজন পিয়নের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২০-৩০ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। সূত্র : কালের কণ্ঠ। 

বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম



করোনার উপসর্গ, একাই বগি নিয়ে ঢাকায় গেলেন রেল কর্মকর্তা

কোভিড-‍১৯ রোগের উপসর্গ দেখা দেওয়ায় বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের এক কর্মকর্তাকে সোমবার ঢাকায় নেওয়া হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-ঢাকা রুটে চলাচলকারী বিরতিহীন ‘বনলতা এক্সপ্রেস’ ট্রেনে আলাদা একটি বগি যুক্ত করে তাঁকে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, এটা কোয়ারেন্টিন কোচ।

ওই কর্মকর্তার নাম সাহিদুল ইসলাম। তিনি পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের চিফ পার্সোনেল অফিসার। সোমবার তাঁকে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকায় নেওয়া হয়। অতিরিক্ত একটি বগিতে তিনি একাই ঢাকায় যান।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, দুই সপ্তাহ ধরে জ্বরে ভুগছেন সাহিদুল ইসলাম। কোনোভাবেই জ্বর কমছে না। তিন দিন থেকে কাশি শুরু হয়েছে। দেখা দিয়েছে শ্বাসকষ্টও। তাই তাঁকে রাজশাহীর ‘করোনা ডেডিকেটেড’ খ্রীষ্টিয়ান মিশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী তাঁকে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে। ঢাকার মহাখালীতে বেসরকারি ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাঁকে।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মিহির কান্তি গুহ বলেন, ‘সাহিদুল ইসলামের করোনার উপসর্গ রয়েছে। তাই আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বললেন, তাঁকে ঢাকায় নিতে হবে। সে জন্য বনলতা এক্সপ্রেসে তাঁর জন্য আলাদা একটি বগি যুক্ত করে তাঁকে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, এটা কোয়ারেন্টিন কোচ। করোনা রোগীদের জন্য এই কোচের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঢাকায় পৌঁছার পর তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। খোঁজ নিয়ে তিনি (মিহির কান্তি) জেনেছেন, তিনি (সাহিদুল ইসলাম) সেখানে ভালো আছেন। (প্রথম আলো)



হাসপাতালে যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না : স্বাস্থ্য সচিব

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ জুলাই, ২০২০, ৬:৩৯ পিএম

স্বাস্থ্য সচিব মো. আব্দুল মান্নান বলেছেন, হাসপাতালে যে মানের চিকিৎসা দেয়া উচিত তা দেয়া হচ্ছে না। আমি নিজেই তার প্রমাণ। পাশাপাশি হাসপাতালে রোগী ভর্তি হতে পারছে না, এই সমস্যা বাংলাদেশে প্রকট। সোমবার (৬ জুলাই) রাজধানীর মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্য সচিব। সেবার মনোভাব নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সচিব বলেন, চিকিৎসকরা যদি দায়িত্বে গাফিলতি করে তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে।

করোনার চিকিৎসায় প্লাজমা নিয়ে কেউ যেন ব্যবসা করতে না পারে সেজন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সার্বক্ষণিক তদারকি করছে বলেও জানান আব্দুল মান্নান। সাধারণ মানুষকে সেবা দেয়া নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মধ্যে সমন্বয়হীনতা ছিলো। আর যেন কোনো সমন্বয়হীনতা না থাকে সে লক্ষ্যে কাজ করে যাওয়ার কথাও জানান স্বাস্থ্য সচিব।

স্বাস্থ্যখাতে ঘুষ, দুর্নীতি ও সিন্ডিকেট হয়তো থাকবে। তবে, যতদিন বাঁচবেন ততদিন মানুষের কল্যাণে কাজ করে যেতে চান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সেবা বিভাগের নতুন সচিব মো. আব্দুল মান্নান।

এদিকে, প্রতিদিন করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়লেও, হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা কমছে। আক্রান্তরা বলছেন, সেবা না পাওয়ার শঙ্কা আর ভোগান্তি থেকে বাঁচতে হাসপাতালমুখো হচ্ছেন না তারা।

অন্যদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, প্রথম দিকের আতঙ্ক কাটিয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষ। সেই সঙ্গে সচেতনতাও বেড়েছে। তাই হাসপাতালে ভিড় কম। আর জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা চিকিৎসায় এখনো রোগীবান্ধব হাসপাতাল গড়ে তুলতে পারেনি সরকার। (ইনকিলাব)


ভারতে ঢুকে পড়েছে চীনা সেনারা, বানাচ্ছে স্থায়ী স্থাপনা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৬ জুলাই, ২০২০, ৯:৩৪ এএম | আপডেট : ১২:৪০ পিএম, ৬ জুলাই, ২০২০

সীমান্তে তীত্র উত্তেজনার মধ্যেই ভারতের অভ্যন্তরে ডুকে পড়েছে শত শত চীনের সেনা সদস্য। তারা পাহাড় কেটে রাস্তা, নদীর ওপরে কালভার্ট, অন্তত ১৬টি সেনা ছাউনির ছবি আগেই ধরা পড়েছিল উপগ্রহ চিত্রে। ভারত-চীন সেনা কমান্ডার পর্যারে তৃতীয় বৈঠকের পরেও গলওয়ান উপত্যকা থেকে তাদের পরিকাঠামো সরিয়ে নেওয়ার কোনও লক্ষণই দেখাচ্ছে না চীন। বরং ভারতীয় সেনা সূত্রের খবর, চীন নির্মাণকাজ বাড়িয়েই চলেছে। এখন গলওয়ান নদীর তীরে অন্তত ১৯টি শিবির তৈরি করেছে তারা। পিচের রাস্তাও তৈরি করা হয়েছে।

গালওয়ান উপত্যকার পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৪-এর কাছে চীনা সেনার তাবু তৈরি নিয়েই সংঘর্ষ হয়েছিল ভারতের সেনাদের সঙ্গে। তাররেও ওই এলাকাসহ গলওয়ানে তাঁবু, রাস্তা তৈরির কাজ থামায়নি চীনা সেনারা।

সেনা সূত্রের দাবি, গলওয়ান নদীর বাঁকে যে এলাকায় চীনা শিবিরগুলো তৈরি হয়েছে, তার কৌশলগত তাৎপর্য অনেক। কারণ তা থেকে গলওয়ান নদীর তীরে ভারতীয় সেনা শিবিরের ওপরে সরাসরি নজর রাখা যায়। ওই এলাকায়, বস্তুত পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৪-এর কাছেই গলওয়ান নদী শাইয়োক নদীতে মিশেছে। ভারতীয় সেনা সূত্রের মতে, ওই এলাকায় বরাবরই টহল দিত তারা। কিন্তু চীনা শিবিরের জন্য আর সেটা সম্ভব নয়। কারণ, এক সেনা কর্তার কথায়, ‘‘চীনা সেনারা ভারতীয় ভূখণ্ডের মধ্যে ১৪৯ মিটার ঢুকে এসেছে।’’

সেনা সূত্রের মতে, ওই এলাকায় এখন তৈরি তাঁবু নিয়ে এসে বসাচ্ছে চীনা সেনারা। গোলাপি ত্রিপলের বদলে দেখা যাচ্ছে কালো ত্রিপল। ভারতীয় সেনাদের চলাচলে বাধা দেওয়ার জন্য তৈরি পাথরের বাধা সরিয়ে এলাকা পরিষ্কার করা হয়েছে। বিশেষ ধরনের পোশাকও ব্যবহার করছে চীনারা। ওই পোশাকের নীচের অংশ বর্ষাতির কাপড়ে তৈরি। তাতে নদীতে নেমে কাজ করতে সুবিধা হচ্ছে। এক সেনা কর্তার কথায়, ‘‘চীনারা ওই এলাকায় স্থায়ীভাবে থাকার প্রস্তুতি চালাচ্ছে, সন্দেহ নেই। পিছু হটার কোনও লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না।’’

সেনা সূত্রের খবর, শ্রীনগর, জম্মুর সুঞ্জওয়ান ও দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামা থেকে ক্রমাগত সেনা ও রসদ লাদাখে নিয়ে যাচ্ছে ভারতীয় বিমান বাহিনী। মোদি সরকারও সীমান্তে পরিকাঠামো তৈরি থেকে পিছু হটবে না বলে ফের ইঙ্গিত দিয়েছেন দেশটির কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণমন্ত্রী নিতিন গডকড়ী। তিনি বলেন, ‘‘জম্মু-কাশ্মীর, অরুণাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান ও হিমাচল প্রদেশের সীমান্ত এলাকায় একাধিক সড়ক তৈরির কাজ চলছে। প্রয়োজনে রানওয়ের কাজও করতে পারে এমন ১৭টি সড়ক তৈরির কাজ চলছে। তার মধ্যে তিনটির কাজ শেষ হয়েছে।’’ সূত্র: আনন্দবাজার


শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট প্যাকেজ : শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, বৈশ্বিক মহামারী করোনাকালে শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে ইন্টারনেট প্রদান অথবা স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট প্যাকেজ দেয়া যায় কিনা সে বিষয়ে মোবাইল অপারেটর কোম্পানির সাথে আলোচনা চলছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, মোবাইল অপারেটর কোম্পানিসমূহ বিষয়টি ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখবেন।

তিনি আজ আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক উপ-কমিটির আয়োজনে ‘বর্তমান বৈশ্বিক সংকটকালে শিক্ষা বিষয়ে আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এক অনলাইন সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, করোনার কারণে দীর্ঘদিন যাবত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রয়েছে। শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিতে আমরা অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের ওপর গুরুত্বারোপ করছি। এদিকে, অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তবে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার ক্ষেত্রে অনেক শিক্ষার্থীর পক্ষে ইন্টারনেটের ব্যয় বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে ইন্টারনেট প্রদান অথবা স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট প্যাকেজ দেয়া যায় কিনা সে বিষয়ে মোবাইল অপারেটর কোম্পানির সাথে আলোচনা চলছে।

আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর আব্দুল খালেকের সভাপতিত্বে এবং আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাপার সঞ্চালনায় এই অনলাইন সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার।

আলোচক হিসেবে আরো যুক্ত ছিলেন বাংলা একাডেমীর সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ডা. কামরুল হাসান খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামাল এবং দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকার সম্পাদক শ্যামল দত্ত।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রতিটি সংকটই আমাদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে দেয়। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চাহিদা অনুযায়ী আমাদের জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপান্তরিত করতে হলে তাদেরকে তথ্য ও প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। তাই আমাদের হয়তো কিছুদিনের মধ্যেই ডিজিটাল শিক্ষা কার্যক্রমে যেতে হতো। করোনা আমাদেরকে এক্ষেত্রে এগিয়ে দিয়েছে। আমরা এখন অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রমসহ অফিস-আদালতে বিভিন্ন মিটিং এবং দৈনন্দিন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, সীমাবদ্ধ থাকবে। অল্প সময়ের মধ্যে আমরা সেই সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠে নতুন এই বাস্তবতার সাথে অভ্যস্ত হয়ে উঠব। করোনা পরবর্তী সময়েও স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রমের সাথে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চলমান থাকবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার সময়ের টিউশন ফি প্রদানের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রী বলেন, দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পরও অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি দেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন। সে ক্ষেত্রে তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অভিভাবক সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, একেবারে টিউশন ফি না দিলে প্রতিষ্ঠান তাদের শিক্ষকদের বেতন দিতে পারবে না। তাই দুই পক্ষকেই কিছুটা ছাড় দিয়ে মানবিক হতে হবে।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, শিক্ষার বিস্তার এবং মেধাবী জাতি তৈরিতে ইন্টারনেটকে ব্যয় নয়, এটিকে রাষ্ট্রের বড় বিনিয়োগ হিসেবে দেখতে হবে।

তিনি বলেন, ভবিষ্যত শিক্ষার ক্ষেত্র কেবলমাত্র ক্লাসরুম কেন্দ্রিক হবে না। প্রচিলিত চক-ডাস্টার পদ্ধতির সাথে ক্লাসরুম ব্যবস্থা ডিজিটাল করতে হবে। অন্যথায় চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য মানব সম্পদ তৈরি করতে পারব না।

তিনি আরো বলেন, ৩ হাজার ৮শ’ ইউনিয়নে উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়া হয়েছে এবং ৭শ’ ৭৭টি ইউনিয়নে ব্রডব্র্যান্ড সংযোগ পৌঁছানোর কাজ শুরু হয়েছে। দেশের হাওর, দুর্গম দ্বীপ ও চরাঞ্চলে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট -১ এর মাধ্যমে উচ্চগতির ইন্টারনেট পৌঁছানোর কাজ শুরু হয়েছে।

শিক্ষা পাঠ্যক্রমে ডিজিটাল শিক্ষা পদ্ধতি প্রবর্তন এবং পেশাদারদের তৈরি মানসম্মত ডিজিটাল কনটেন্ট এর মাধ্যমে পাঠ প্রদান সময়ের চাহিদা বলে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী উল্লেখ করে বলেন, প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত ডিজিটাল শিক্ষা কনটেন্ট তৈরি এবং কনটেন্টের মাধ্যমে পাঠদান অপরিহার্য।

তিনি শিক্ষা বিস্তারের স্বার্থে শিক্ষার্থী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য ইন্টারনেট সুবিধা সহজলভ্য করতে সম্ভাব্য সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণের দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। বাসস



No comments

Powered by Blogger.