নারীর অধিকার ও নারীর সম্মান। Women rights and prestiges By: Shottoshondhani(সত্যসন্ধানী)
নারীর
অধিকার ও নারীর সম্মান (পর্ব-২)
মুহাম্মাদ আহসান উল্লাহ কাশেমপুরী
আল্লাহ
সমগ্র সৃষ্টির অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের কথা জানেন। তিনি মানুষের ভাল-মন্দ সম্পর্কেও
অবগত। তাই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’লা পুরুষ ও নারীর নজর ও লজ্জাস্থানের হেফাযতের করার
কথা বলেছেন। কারণ নজর দীর্ঘয়িত করার ফলে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ তৈরি হবে। এতে
মানুষের মধ্যে কামভাব সৃষ্টি হয়। তাই ইসলাম ধর্মে বিয়েকে সহজ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু
আমাদের সমাজে ইসলামের এই বিধানকে উপেক্ষা করা হয়। বর্তমানে বিয়ে করতে গেলে উচ্চপদস্থ
চাকুরি, সুন্দর চেহারা ও অর্থ-সম্পত্তির এক বিরাট পরীক্ষা দিতে হয়। দুই পক্ষের মধ্যে
চলে অর্থিক মূল্য বিবেচনা। এতে অনেক ছেলে-মেয়ের উপযুক্ত বয়সে বিয়ে হয় না। কারণ সবাইতো
আর ধনী হয় না। ফলে কি হয়? নিজেদের চাহিদা পূরণ করার জন্য ছেলে-মেয়ে অবৈধ সম্পর্ক, ইভটিজিং
ও ধর্ষণের মতো জঘন্য কাজে জড়িয়ে পড়ে। বর্তমান সময়ে আমরা হর-হামেশাই এমন দৃশ্য দেখতে
পায়। এর মূল করণ হচ্ছে আল্লাহ ও রাসুলের বাণী উপেক্ষা করে নিজেদের মনগড়া পথে চলা। এছাড়াও
ঈমানদার নারীদের সম্ভ্রম রক্ষার জন্য আল্লাহ তাদের মাথা ও বক্ষদেশ ওড়না দ্বারা আবৃত
করতে বলেছেন। এমনভাবে তারা হাঁটবে না যাতে তাদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশ পায়। বিশেষ অঙ্গ
প্রদর্শন ও পরপুরুষের সামনে নিজের সৌন্দর্য প্রকাশ না করার জন্য তাগিদ দিয়েছেন। কিন্তু
আমাদের সমাজের মা-বোনেরা কি সৃষ্টিকর্তার এই বিধানকে মেনে চলেন? সম্ভাবত না। আর চললেও
আংশিক করেন, সম্পূর্ণ না। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে।
সূরা
আযহাবের ৩৩ নং আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’লা বলেন –“আর তোমরা নিজেদের ঘরে অবস্থান
কর। পূর্বতন জাহেলী যুগের মতো সেঁজে-গুজে নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়িও না”। বর্তমান
সময়ের নারীদের মধ্যে এই ধারণা বদ্ধমূল হয়েছে যে, যদি নিজের সৌন্দর্য কাউকে না দেখানো
হয়, তবে এই সৌন্দর্যের মূল্য কি? উক্ত আয়াতে আল্লাহ জাহেলী যুগের কথা উল্লেখ করেছেন।
এর কারণ কি? কি হতো জাহেলী যুগে নারীদের সাথে? ইতিহাসে এর উত্তর স্বর্ণক্ষরে লেখা আছে।
জাহেলী যুগে নারীরা আমাদের সমাজের মেয়েদের মতো নিজেদের প্রদর্শন করে বেড়াতো। কিন্তু
সমাজে তাদের কোনোই মূল্য ছিল না। কন্যাসন্তানকে সেই সময় জীবন্ত কবর দেওয়া হতো। তখনকার
সময়ে নারীদের শুধুমাত্র ভোগের বস্তু হিসেবেই ব্যবহার করা হতো। যদি কোনো গর্ভবতী মহিলা
রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতো, তখন পুরুষের বাজি ধরে ঐ মহিলার পেট চিরে দেখতো যে, তার পেটে
ছেলে সন্তান না মেয়ে সন্তান। হ্যাঁ, আমি এটা অস্বীকার করবো না যে, নারীদের শিক্ষার
কোনো দরকার নেই। ইসলাম ও নারীদের শিক্ষার বিপরীতে না। তাদের ও শিক্ষার দরকার আছে। নতুবা
তারা কিভাবে তাদের সন্তানদেরকে আদর্শবান হিসেবে গড়ে তুলবে? এই জন্যই বেগম রোকেয়া নারী
শিক্ষার জন্য আন্দোলন করেছিল। কিন্তু আজ নারীদের ভুল পদ্ধতিতে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে ।
যার কারণে আমাদের সমাজে এই বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হচ্ছে। নারীদের শিক্ষার ব্যাপারে ইসলাম
এক সুন্দর সমাধান দিয়েছে। ইবনে মাসউদ (রা.) হতে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) বলেছেন, “মহিলার
হলো পর্দায় থাকা বস্তু, সুতরাং তারা যখন (পর্দা উপেক্ষা করে) বাইরে আসে, তখন শয়তান
তাদেরকে (অন্য পুরুষের চোখে) সুসজ্জিত করে দেখায়”। (তিরমিযি)। উক্ত হাদিস অনুসারে মেয়েরা
শিক্ষালাভ করবে কিন্তু পর্দা উপেক্ষা করে না। পর্দার মধ্যে থেকে তারা সব কিছু শিখতে
পারবে। যখন মহাজ্ঞানী আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’লা ও তাঁর রাসুল বলেছেন পর্দায় থাকতে,
সেখানে আজ আমাদের মেয়েরা বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগীতার জন্য নিজেদেরকে প্রস্তুত করে। পাতলা
পোশাক পরে ওড়না ব্যবহার না করে, ভ্রু উপড়িয়ে, সুন্দর করে মেকাপ করে, গর্জিয়াস সুগন্ধি
ব্যবহার করে এমনভাবে রাস্তায় বের হয়, যা দেখে যুবক, মধ্যবয়সী এমনকি বৃদ্ধরা পর্যন্তও
হা করে তাকিয়ে থাকে আর এসময় শয়তান তাদের মনে কুমন্ত্রনা ঢালতে থাকে। এরপর ঘটে ইভটিজিং,
পরকীয়া, ধর্ষণ এর মতো জঘণ্য ঘটনা। এসব মেয়েদের দেহ একসময় পাওয়া যায় ঝোঁপের আড়ালে অর্ধনগ্ন
অবস্থায়, ডোবা-নালায় অর্ধগলিত অবস্থায় অথবা বস্তা বা ব্যাগের মধ্যে কোনো ময়লার ডাস্টবিনের
মধ্যে। ইহুদীবাদী কিছু লেখক লেখিকা আমাদের মেয়েদের মধ্যে এমন প্রবণতা ঢুকিয়ে দিয়েছে
যে, বিশ্রীভাবে নিজেকে প্রদর্শনে তারা একে অপরের সাথে প্রতিযোগীতা করছে এবং একটাকেই
তারা স্মার্টনেস ভাবে। নারী পুরুষের ভেদাভেদকে তারা একসাথে গুলিয়ে ফেলেছে। ফলে তারা
স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি, বাস, রাস্তায় এমনকি শিক্ষক ও নিকট আত্মীয়দের দ্বারা লাঞ্চিত
হচ্ছে। এ পরিস্থতি দিন দিন যেভাবে জটিল ও ভয়াবহতার দিকে যাচ্ছে তা সমাধান করা আমাদের
জন্য নৈতিক দায়িত্ব হয়ে দাঁড়িছে।
আমরা
প্রত্যেকেই কারোর না কারোর বাবা, স্বামী, ভাই অথবা ছেলে। আমাদের মেয়েদের সম্ভ্রম বাঁচানোর
দায়িত্ব আমাদেরই। কিভাবে আমরা এই জটিল সমস্যা সমাধান করতে পারি, তা শেষ
পর্বে আলোচনা করব ইনশাল্লাহ।
চলবে ................ (শেষ পর্ব)
চলবে ................ (শেষ পর্ব)
By: Shottoshondhani(সত্যসন্ধানী)
Hello Sir, i am big fan of this website. Can you tell me please This www.bdjobs99.com information i am waiting for your next article.
ReplyDelete